টাইটানিক জাহাজ কেন ডুবে গিয়েছিল - Titanic ship history - Smile Bangla

টাইটানিক কেন ডুবে গিয়েছিল 



টাইটানিক


টাইটানিক ছিল ব্রিটিশ যাত্রীবাহী জাহাজ। জাহাজটি তার প্রথম যাত্রায় ১৯১২ সালের ১৫ এপ্রিল উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরে ডুবে যায়। 

 এই দুর্ঘটনায় ১৫০০ জনেরও বেশি মানুষ মারা যান, যা ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ সমুদ্র দুর্ঘটনা। টাইটানিক কেন ডুবে গিয়েছিল তার কারণ নিয়ে এখনও বিতর্ক চলছে। এই ব্লগ পোস্টে আমরা এই বিষয়টি বিশ্লেষণ করবো এবং টাইটানিক কে তৈরি করেছিল?,টাইটানিক কেন ডুবে গিয়েছিল?, টাইটানিক ডুবে যাওয়ার জন্য কোন কোন কারণ দায়ী ছিল? তা আলোচনা করবো।


টাইটানিক জাহাজের ছবি



টাইটানিক  ছিল হোয়াইট স্টার লাইনের অলিম্পিক-শ্রেণীর জাহাজের দ্বিতীয়টি, যা হ্যারল্যান্ড অ্যান্ড ওল্ফ বেলফাস্টে নির্মাণ করেছিল। 


নির্মাণের শুরু:


★ টাইটানিকের নির্মাণ কাজ শুরু হয় ১৯০৯ সালের ৩১ মার্চ ।

★ জাহাজটির নকশা করেছিলেন থমাস অ্যান্ড্রুজ, যিনি হ্যারল্যান্ড অ্যান্ড ওল্ফের নকশা বিভাগের প্রধান ছিলেন।

★ টাইটানিক ছিল তার সময়ের সবচেয়ে বড় এবং বিলাসবহুল জাহাজ।

★এটিতে ১৬টি জলরোধী কক্ষ ছিল, যা জাহাজটিকে ডুবতে অক্ষম করে তুলবে বলে ধারণা করা হয়েছিল।

আরো দেখুন:এশিয়ার সবচেয়ে প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয়টির কেন শেষ হয়ে গিয়েছিল।

বিলাসবহুল সুযোগ-সুবিধা:


 টাইটানিকের যাত্রীদের জন্য বিলাসবহুল সুযোগ-সুবিধা ছিল, যার মধ্যে রয়েছে:

    * সুইমিং পুল

    * লাইব্রেরি

    * জিম

    * স্কোয়াশ কোর্ট

    * টার্কিশ বাথ

    * উচ্চমানের রেস্তোরাঁ


দুর্ঘটনা এবং ডুবে যাওয়া কারণ:


★১৯১২ সালের ১০ এপ্রিল, টাইটানিক সাউথহ্যাম্পটন থেকে নিউ ইয়র্ক শহরে যাত্রা শুরু করে।

★ ১৯১২ সালের ১৪ এপ্রিল রাতে, জাহাজটি উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরে একটি বরফখণ্ডের সাথে ধাক্কা খায়।

★ ধাক্কার ফলে জাহাজের ষষ্ঠ কক্ষে ফাটল দেখা দেয় এবং জাহাজটি পানিতে ডুবতে শুরু করে।

★ জাহাজে প্রায় ২,২২৪ জন ছিল, তবে কেবল ৭০৫ জন বেঁচে যায়।

★ টাইটানিকের ডুবে যাওয়া ইতিহাসের অন্যতম একটি মর্মস্পর্শী ঘটনা হয়ে থাকবে।


কারণ:


★ টাইটানিকের ডুবে যাওয়ার জন্য বেশ কয়েকটি কারণ অবদান রেখেছিল।

★ জাহাজটির গতি বেশি ছিল, যা বরফখণ্ডের সাথে ধাক্কা খাওয়ার সময় দ্রুত ব্রেক করার ক্ষমতাকে সীমাবদ্ধ করে।

★ জাহাজে পর্যাপ্ত লাইফবোট ছিল না, যার ফলে অনেক যাত্রী এবং ক্রু সদস্য ডুবে যায়।

★ জাহাজের ক্যাপ্টেন এডওয়ার্ড স্মিথ বরফখণ্ডের সতর্কতা উপেক্ষা করেছিলেন।


উত্তরাধিকার:


★ টাইটানিকের ডুবে যাওয়া সমুদ্রপথে নিরাপত্তা নিয়মের পরিবর্তনের দিকে পরিচালিত করে।

★ আন্তর্জাতিক সমুদ্র সংস্থা (IMO) প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল যাতে ভবিষ্যতে অনুরূপ দুর্ঘটনা রোধ করা যায়।

★ টাইটানিকের ডুবে যাওয়ার পর এই দুর্ঘটনা নিয়ে অনেক সাহিত্য, চলচ্চিত্র,গান নির্মিত হয়েছে।


আরো দেখুন:জিমেইল এর জায়গা খালি করুন এক ক্লিকে

কারণসমূহ বিস্তারিত আলোচনা:


আইসবার্গের সাথে সংঘর্ষ: 

টাইটানিক ডুবে যাওয়ার প্রধান কারণ ছিল আইসবার্গের সাথে সংঘর্ষ। জাহাজটি উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের বরফ-ঢাকা জলে দ্রুত গতিতে চলছিল। রাত ১১:৪০ টার দিকে, জাহাজটি একটি আইসবার্গের সাথে ধাক্কা খায়। ধাক্কার ফলে জাহাজের ডান দিকের ৬টি জলরোধী কক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।


জলরোধী কক্ষের ব্যর্থতা: 


টাইটানিক ডিজাইন করা হয়েছিল ১৬টি জলরোধী কক্ষ নিয়ে। জাহাজটি ৪টি কক্ষ পর্যন্ত ক্ষতি সহ্য করতে পারবে বলে ধারণা করা হয়েছিল। কিন্তু আইসবার্গের ধাক্কায় ৬টি কক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় জাহাজটি ডুবে যেতে শুরু করে।


পর্যাপ্ত লাইফবোটের অভাব:


টাইটানিকে ১১৭৮ জন যাত্রী এবং ৮৯১ জন কর্মী নিয়ে যাত্রা শুরু করে। কিন্তু জাহাজে মাত্র ১১৭৮ জনের জন্য লাইফবোট ছিল। অর্থাৎ, জাহাজে থাকা সকলের জন্য লাইফবোট ছিল না।


ত্রুটিপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ:


টাইটানিকের ক্যাপ্টেন এডওয়ার্ড স্মিথ কিছু ত্রুটিপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিলেন। তিনি জাহাজের গতি কমাতে অস্বীকার করেছিলেন এবং আইসবার্গের সতর্কতা বার্তাগুলো উপেক্ষা করেছিলেন।


নিরাপত্তা নিয়মের অভাব:

সেই সময়ে সমুদ্রযাত্রার জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিয়ম ছিল না। জাহাজে যাত্রীদের সংখ্যার তুলনায় লাইফবোটের সংখ্যা নির্ধারণের কোন নিয়ম ছিল না।


শেষ পরিনতি:


টাইটানিক ডুবে যাওয়ার ফলে ১৫০০ জনেরও বেশি মানুষ মারা যান। এই ঘটনা সমুদ্রযাত্রার নিরাপত্তা নিয়ম কানুন পরিবর্তনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এর ফলে আন্তর্জাতিক সমুদ্র সংস্থা (IMO) প্রতিষ্ঠিত হয় এবং সমুদ্রযাত্রার জন্য নতুন নতুন নিরাপত্তা নিয়ম কানুন প্রণয়ন করা হয়।



টাইটানিক ডুবে যাওয়া একটি বেদনাদায়ক ঘটনা হয়ে আছে এবং থাকবে। এই ঘটনা নিয়ে নির্মিত হয়েছে টাইটানিক নামক চলচ্চিত্র যা কোটি কোটি মানুষকে কাঁদিয়েছে।

Tags

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.